পাতা খেলার মন্ত্র

পাতা খেলা আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে শুরু হয় । এই খেলা বাংলাদের সব জায়গায় কম বেশি হয় । কিন্তু নওগাঁ, মহাদেব পুর, বগুড়া, রাজশাহী এই সব এলাকায় এই খেলা বেশি হয় । এ

পাতা খেলা কিভাবে খেলে

পাতা খেলা আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে শুরু হয় । এই খেলা বাংলাদের সব জায়গায় কম বেশি হয় । কিন্তু নওগাঁ, মহাদেব পুর, বগুড়া, রাজশাহী এই সব এলাকায় এই খেলা বেশি হয় । এই খেলা অনেকদিন পর পর হওয়ার কারণে, খেলা দেখতে মাঠে অনেক মানুষ ভিড় করেন ।

এই খেলা বিকাল থেকে শুরু করা হয় । একটি মাঠের মাঝ খানে বড় একটি কলার গাছ পোতা হয় । সেই গাছে তান্ত্রিক বিষ চালান করে । এবং ঢোল বাজানো শুরু হলে যারা খেলোয়ার বা পাতা পানি পড়ে হাতে ছিটে দিলে তারা দৌরে কলার গাছে চলে যায় ।

বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক কবিরাজ বা তান্ত্রিকের দল আসে । নিজ নিজ মন্ত্র দিয়ে পাতাকে নিজের দিকে টানার প্রতিযোগিতা করেন একেকটা দল । দলের তান্ত্রিকদের নাম হলোঃ ১। তান্ত্রিক বিশ্বজিৎ অধিকারি, ২। কবিরাজ মোঃ কবির, ৩। কবিরাজ লালন , ৪। মোঃ সবুজ হোসেন । 

এই খেলায় তন্ত্রমন্ত্রের মাধ্যমে পাতাদের মন্ত্রের মাধ্যমে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন তান্ত্রিক বা ওঝা। মন্ত্রের শক্তিতে পরাস্ত কোনো পাতা নির্ধারিত দাগের বাইরে বেরিয়ে এলে জয়ী হন তান্ত্রিক। আর মন্ত্রের শক্তিকে দমন করে কোনো পাতা নিজের সীমানায় অটল থাকলে বিজয়ী হন তিনি।

পাতা টানা কিছু মন্ত্র নিচে লিখে দেওয়া হলোঃ

পাতাকে হাত তুলে দেওয়া মন্ত্র

হাত চালুম, হাতুনি চালুম
কাটে পাটে দেবি চালুম
জয় দুর্গা ভবানী চালুম
চল হাত চল যেখানে
সাপের বিষ যেখানে বিল চল ।
সাপের বিষ থাকতে
যদি মিথ্যা কথা কস 
ভাদ্র মাসের বাশ চোরের
মার্গে চলে যাস ।

হাত চালা মন্ত্র

পদ্ম পত্রের বিষ টলমল করে
মারলাম বজ্জর চাপট
মস্তকের উপরে
চল বিষ চল
যেখানকার লাগিয়ে বিষ
সেখান বিলা চল ।
ওরে কোন কোন বোরা
ওরা বোরা চক্ষরা বোরা
আঙ্গুইলা বিগুইদা বোরা
আমার মন্ত্র যদি হরে
ত্রিশ কোটি দেবতার
মুন্ডু ছিড়ে ভূমিষ্টে পড়ে ।
আদ্দের খাও ধর্মের ঘাও
চাপটে বিষ জল হয়ে যাও ।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পাতা খেলা মন্ত্র

দুই চোখে দেখাদেখি
চার চোখে টানাটানি
সপ্ত চোখে বশ
আমাকে ছাড়িয়া যদি অন্যদিকে যাস
দোহাই তোর-মহাদেব
দোহাই তোর- ঈশ্বরের মাথা খাস ।

২।
কোথায় চলিয়া যায় করিয়া পরাণ
ধর্ম্মের আজ্ঞায় ছুটে যায় অগ্নি বান ।
প্রথমে পুড়ে একা বান 
দুই পুড়ে দ্বিতীয়ার চাঁদ
তিনে পুড়ে তিন কোন পৃথিবী ।
চারে পুড়ে চারি বেদ,
পাচে পুড়ে পঞ্চ পান্ডব,
ছয়ে পুড়ে ছয় রিপু,
সাতে পুড়ে সাতালী পর্ব্বত ।
আটে পুড়ে আটকুড়া নাগ ।
ঝরে বিস গোখুরার - 
বিষহরির আজ্ঞায় ।

৩।
ঝমকা বান ।
ছোট রাজা বলে ভাই,
বড় রজক ভাই
পাতা টানা মন্ত্র আমি কোথা গেলে পাই ।
 রক্তের কুল কুল রক্তের ফলা,
ঝমকা বান মারি
পাতাকে পোড়ুক ঝনঝনা ।
যদি বান ঠেলুস
মা কালীকে হরণ কোরুস ।
কার আজ্ঞা
পদ্দা দেবির আজ্ঞা ।

৫। 

পাতা টানার সময় অন্য কবিরাজ বান মারলে এই মন্ত্র পড়ে

হাত বন্দ পা বন্দ আর বন্দ কুল
যত কিছু মার বান তাঁর নাই ঊল
এ কথা জিজ্ঞাশ যে নবকুশের ঠাঞী
আশে পাশে জাবেক বান অঙ্গ ছুবেক নাই 
আর আজ্ঞে-
নব কুশের আজ্ঞে ।

৬।

পাতা টানা মন্ত্র

হেন গর্ভ সিজিল বিশ নাশ যাবার তরে,
নিজের আসন ছাড়িয়া পাতা আমার দিকে আসে ।
আজ্ঞা দিলেন মা মনসা উমা মহেশ্বরীর বর ।

এই মতো মন্ত্র পাঠ করে পাতা টানা শুরু করেন তান্ত্রিক বা ওঝারা । খেলা শেষ হলে যারা বিজয়ী হবে তাদের বিভিন্ন ধরনের উপহার পুরস্কার দেওয়া হয় । প্রথম পুরষ্কার একটি গামছা আর একটি বালতি পেয়েছেন তান্ত্রিক বিশ্বজিৎ অধিকারি । দ্বিতীয় পুরস্কার গামছা আর সাবান পেয়েছেন কবিরাজ মোঃ কবির, ৩য় পুরষ্কার একটি বদনা পেয়েছেন কবিরাজ লালন । 

পাতা খেলার মন্ত্র বই

পাতা খেলা মন্ত্র যদি কারো লাগে তাহলে আমার imo & whatsapp 01828370914 মেসেজ দিবেন । 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন