১। যে না মাখে পাকা পেঁপে
তার চামড়া খসখসে
অর্থঃ ত্বকে পাকা পেঁপে ঘসে লাগালে দীর্ঘদিন ত্বকের লাবন্য বজায় থাকে । কেননা, পাকা পেঁপেতে ভিটামিন এ, প্যাপেইন নামক এ্যানজাইম এবং প্রোটিন থাকায় চামড়া কুঁচকে যাওয়া রোধ করে ।
২। মন্ডা-মিঠাই দূরে
ওজন যাবে সরে ।
অর্থঃ শরীরের ওজন কমাতে হলে মিষ্টি জাতীয় খাদ্য বর্জন করতে হবে । মিষ্টি জাতীয় খাদ্য শরীরে ক্যালরি বৃদ্ধি করে এবং চর্বি জমাতে সাহায্য করে এতএব মিষ্টি এড়িয়ে চলাই উত্তম ।
৩। হলুদ ও নিম দাও
সোনার ত্বক ফিরে পাও ।
অর্থঃ ত্বকে কাচা হলুদ ও নিম পাতার রস ব্যবহার করলে ত্বক সোনার মতো উজ্জ্বল হয় । চা-চামচের চার ভাগের এক ভাগ কাচা হলুদ পেস্ট, আধা চামচ লেবুর রস এবং এক চামচ নিম পাতার রস মিশিয়ে পেস্ট করতে হবে । সেই পেস্ট ত্বকে লাগিয়ে ১৫মিনিট অপেক্ষা করে, কুসুম কুসুম গরম জলে ত্বক ধুয়ে ফেলতে হবে । তাহলে ত্বক উজ্জ্বল হবে ।
স্বাস্থ্য সম্পর্কে খনার বচন
৪। নিত্য নিত্য ফল খাও
বদ্যি বাড়ি নাহি যাও ।
অর্থঃ প্রতিদিন ফল খেলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না । ফলে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন থাকায় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং প্রাকৃতিক এ্যন্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে ।
৫। পান্তা ভাত খাও
রক্তচাপ কমাও ।
অর্থঃ পান্তা ভাত খেলে রক্ত চাপের ঝুকি কমে । পান্তা ভাতে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে, তার ফলে মানব শরীরের উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে ।
৬। আঁতে তিতা দাঁতে নুন
উদর ভরো তিন কোণ ।
অর্থঃ মাঝে মাঝে তেতো নিমের পাতার সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত ভালো থাকে । পাকস্থলির চার ভাগের এক ভাগ জায়গা খালি রেখে খাদ্য গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ।
৭। কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে ভাই
পান্তা ভাতের জুড়ি নাই ।
অর্থঃ পান্তা ভাত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় । পান্তা ভাতে পটাশিয়াম এবং জলের পরিমান বেশি থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে ।
৮। জর ভিটায় তুলে ঘর
সে আসে তারই জ্বর ।
অর্থঃ অপরিচ্ছন স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় বসত ঘর বানালে সেই ঘরে বসবাসকারীর অসুখ বিসুখ লেগেই থাকে ।
৯। আম নিম জামের ডালে
দাঁত মাজো কতুহলে ।
অর্থঃ আম, নিম, এবং জাম গাছের ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত রোগহীন এবং মজবুত থাকে ।
১০। খেতে বসলে কীসের দায়
পাকনা ধান জলে যায় ।
অর্থঃ জমির পাকা ধান যদি জলে ভেসেও যায় তবুও খাবার গ্রহণের সময় ব্যস্ত হওয়া উচিৎ নয় । নিশ্চিন্ত মনে খাদ্য গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ।
১১। খানা খায় করে শব্দ
অলক্ষ্মী খুশি, লক্ষ্মী জব্দ ।
অর্থঃ শব্দ করে খাদ্য না খেয়ে নিরবে খাদ্য গ্রহণ করা মঙ্গলজনক ।
১২। খেয়ে উদাইম্যা ভাত
শাইল করে উৎপাত ।
অর্থঃ ঢেকে না রাখা ভাত বা খোলা জায়গায় রাখা ভাত খেলে শরীর অসুস্থ হওয়ার ঝুকি থাকে ।
১৩। পান্তা ভাত খেলে
রক্তাল্পতা যাবে চলে ।
অর্থঃ পান্তা ভাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ থাকায় মানব দেহের রক্ত স্বল্পতা দূর হয় ।
১৪। যত জ্বালে ব্যঞ্জন মিষ্ট
তত জ্বালে ভাত নষ্ট ।
অর্থঃ বেশি সময় ধরে তরকারি জ্বাল দিলে বা সিদ্ধ করলে তরকারি সুস্বাদু হয়; কিন্তু ভাতে বেশি জ্বাল দিলে সে ভাত খাবার যোগ্য থাকে না ।
১৫। ছায়ার ওলে চুলকায় মুখ
তাতে কিন্তু নাহি দুখ ।
অর্থঃ ছায়ায় জন্মানো ওল তরকারি হিসেবে খাওয়ার সময় সামান্য মুখ চুলকালেও তাতে দুঃখ নেই, কারণ ছায়াযুক্ত জায়গায় ওলের ফলন বেশি হয়, তাতে অর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়, তাই মনে আফসোস থাকে না ।
১৬। মানুষ মরে যাতে
গাছলা সারে তাতে ।
পচলা সরায় গাছলা সারে
গোধলা দিয়ে মানুষ মারে ।
অর্থঃ পচা গোবরের দূর্গন্ধে মানুষের রোগ বালাই হয়, কিন্তু তারই সাহায্যে উদ্ভিত সকল সতেজ ও সবল হয়ে থাকে ।
১৭। যে না শোনে খনার বচন
তার সংসারে চির পচন ।
অর্থঃ মহিয়সী নারী খনা কর্তৃক প্রদানকৃত বচনগুলোকে যে বা যারা অবহেলে করে তাদের সংসারে অকল্যাণ লেগেই থাকে ।
ফল নিয়ে খনার বচন
১৮। এক হাত এক মুট কলা পুত
তবে দেখবে কলার গোট ।
অর্থঃ কলার গাছ রোপনের সময় সোয়া হাত গর্ত করে রোপন করলে সেই গাছে প্রচুর পরিমাণে কলা জন্মে ।
১৯। এক পুরুষে রোপে তাল
অন্য পুরুষে করে পাল ।।
অপর পুরুষে ভুঞ্জে তাল ।।
অর্থঃ তাল গাছের কাঠ ব্যবহার উপযোগী হতে হলে কমপক্ষে তিন পুরুষ গত হতে হয় । তাল গাছটি যদি পিতা রোপন করে, তাহলে তার পুত্রকে সেই গাছের যত্ন নিয়ে বড় করতে হয় । নাতি-নাতনীরা সেই গাছের কাঠ ব্যবহার করতে পারে ।
২০। চোর সেবক, চোর গাই, খল পড়শি, দুষ্টু ভাই
দুষ্টা নারী পুত্র জুয়ার, খনা বলে করো পরিহার ।
অর্থঃ নিজের অধীনস্থ লোক যদি কাজে ফাকি দেয়, দুধ দোয়ানোর সময় গাভী যদি দুধ তুলে রাখে তাহলে তাদের সম্পর্কে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে । খল চরিত্রের ভাই, বন্ধু, প্রতিবেশী, দুষ্টু চরিতের নারী ও জুয়াড়ী পুত্রের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে । তবেই জীবনে সুখ লাভ করা সম্ভব ।