ধ্বজভঙ্গ রোগ বলতে কি বোঝায় ! রতিশক্তি না থাকলেই তাকে ধ্বজভঙ্গ বা ক্লীব, নপুংসক বলা হয় । কাজেই যাদের কামশক্তি বা রতিশক্তি নেই, তাদেরকেই উত্তমরূপ আখ্যাদান করা যায় । এই রোগ সাতটি কারণে হয়ে থাকে বা সাত প্রকার । যথাঃ--
১। শোকাদি জনিত,
২। মানসিক বা বিদ্বেষ ভাজনে স্ত্রী সহ সঙ্গম জনিত,
৩। পিত্ত রোগ জনিত,
৪। শুক্রক্ষয় জনিত,
৫। লিঙ্গরোগ জনিত,
৬। কাম রোধ জনিত,
৭। সহজ বা আজন্ম ।
ধ্বজভঙ্গ হওয়ার কারণ
১। ভয় ও শোক জনিত ধ্বজভঙ্গঃ ভয় এবং শোক প্রভুতি কারণে সঙ্গমেচ্ছু ব্যক্তির মন বিমুগ্ধ হলে তার শিশ্ন অর্থাৎ লিঙ্গ নিস্তেজ এবং পতিত হয়ে যায় । এবং কিছুতেই উন্নয়ন শক্তি উৎপাদন করতে পারে না । তাকেই ভয় শোকাদি জনিত ধ্বজভঙ্গ বলে ।
২। মানসিক বা বিদ্বেষভাজন স্ত্রী-সহসংগম জনিত ধ্বজভঙ্গ, বিদ্বেষ ভাজন স্ত্রী সহ রমন করলে পুরুষের ক্লৈব্য জন্মে ।
৩। পিত্তজ ধ্বজভঙ্গ- অতিরিক্ত পরিমাণে কটু জিনিস, অম্লদ্রব্য উষ্ণ বস্তু এবং লবণাক্ত সামগ্রী ভোজন এবং সেবন করলে দেহে পিত্ত বৃদ্ধি হয়ে শরীরস্থ শুক্রের হ্রাস পায় । তার ফলে মানবের ক্লীবত্ব বা ধ্বজভঙ্গ রোগ হয় । ইহাকে পিত্তজ ধ্বজভঙ্গ বলে ।
৪। শুক্রক্ষয় ধ্বজভঙ্গ অতিরিক্ত স্ত্রী সঙ্গম এবং স্বপ্নদোষ বা হস্তমৈথুন দ্বারা শুক্রপাত করার কারণে শুক্রক্ষয় হয়ে রোগ দেখা দেয় । ইহাকে শুক্রক্ষয় ধ্বজভঙ্গ বলে ।
৫। লিঙ্গরোগ ধ্বজভঙ্গ-লিঙ্গে উৎকট রোগ জন্মিলেও পুরুষের ধ্বজভঙ্গ হয় । কারণ রোগ প্রভাবে বীর্য্যবাহী শিরা ছিন্ন হয়ে যায় । এই রোগকে লিঙ্গরোগ ধ্বজভঙ্গ বলা হয়ে থাকে ।
৬। কামরোধক ধ্বজভঙ্গ যে সমস্ত ব্যক্তি বলিষ্ঠ অথচ তারা সংসার ত্যাগী হয়ে ব্রক্ষচর্য্যাদি ব্রত পালন করে কামের উদরে দমন পূর্ব্বক রোধ করে রাখে। তাদেরও শেষ পর্যন্ত ধ্বজভঙ্গ রোগ দেখা দেয় । ইহাকে কামরোধক ধ্বজভঙ্গ বলে ।
৭। সহজ বা আজন্ম ধ্বজভঙ্গ যে ব্যক্তি গর্ভ হতেই ক্লীব অর্থাৎ নপুংসক, একেই শজ বা আজন্ম ধ্বজভঙ্গ বলা হয়ে থাকে ।
সুতরাং সহজ এবং লিঙ্গ রোগ জনিত ধ্বজভঙ্গ, এই দু প্রকারের ধ্বজভঙ্গ রোগের যত প্রকার তদবীর করা যাক না কেন, কিছুতেই তা আরোগ্য হয় না । তদ্ব্যতীত উল্লিখিত অন্য প্রকারের ধ্বজভঙ্গ রোগের চিকিৎসা এবং তদবীরাদি করলে ইনশাআল্লাহ আরোগ্য হতে পারে । কাজেই তদবীর এবং চিকিৎসা করার পূর্বে রোগ উৎপত্তির কারণ ইত্যাদি বিশেষ রূপে অবগত হয়ে চিকিতসাদি করলে কখনও ব্যর্থ মনঃষ্কাম হতে হয় না ।
১। উল্লিখিত দু প্রকারের ধ্বজভঙ্গ রোগী ছাড়া পাঁচ প্রকারের ধ্বজভঙ্গ রোগের জন্য নিম্নলিখিত তদবীরটি করে দিবে । যথা একটি নিখুঁত বড় রকমের পানের উপরে গোলাপ পানি জাফরান এবং মিস্ক (মৃগনাভি চূর্ণ) মিশ্রিত কালি দ্বারা এক নম্বর দোয়াটি লিখে প্রথম দিনে এবং দুই নাম্বার দোয়াটি দ্বিতীয় দিনে উক্ত দোয়া লেখা পানটিকে বিনা চূন এবং খদিরে একটু মধু অল্প সুপারি এবং অল্প মৃগনাভি চূর্ণ (মিস্ক) দিয়ে খেয়ে নিতে বলবে । ইনশাআল্লাহ ধ্বজভঙ্গ রোগ ভালো হয়ে যাবে ।
যে ব্যক্তির ধ্বজভঙ্গ রোগ হয়েছে তাহার উচিৎ যে এই নিম্ন লিখিত দোয়াটি প্রতি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর অথবা ফজর এবং এশার নামাজের পর সাতবার করে কিছু দিন যাবত পাঠ করে । ইনশাআল্লাহ আরোগ্য লাভ করবে ।
দোয়াটি এইঃ-
বিস্মিল্লাহ......... কাফ, হে, ইয়া, আইন, সোয়াদ, হা মিম আঈন সিন ক্বাফ ইয়া হাইয়ু ইয়া ক্কাইউম ইয়া সামাদো ইয়া ফ্যারদো ইয়া বিতরুন্তায়া ফেএয়ানি মিনাল আনাতে তাক্কদের আলাল জামায়ি ওয়া সাল্লাল্লাহ আলা মোহাম্মাদিও ওয়া আলিহী আজমাঈন । (সাতবার)
ধ্বজভঙ্গ রোগের ঔষধ
১। পুরুষ চড়াই পাখীর গোস্ত ঘিয়ে ভেজে কিছু দিন যাবত ভক্ষণ করলে ধ্বজভঙ্গ রোগ ভাল হয় । অবশ্য প্রতিদিন একটি করে পাখীর গোস্ত খেতে হবে ।
২। পানের সঙ্গে নাগ কেশর ফুলের আতর এক রতি পরিমান দিয়ে ভক্ষন করবে । এবং ওই আতরের এক রতি পরিমান নিয়ে লিঙ্গের গোড়ার দিকে ভালরূপে মালিশ করে তার উপরে একটি পান স্থাপন করে কাপড় ছেঁড়া দিয়ে ভালরূপে বেঁধে কিছুক্ষনের জন্য রেখে দিবে । এরূপে দু বা তিনদিন উক্ত আতর ভক্ষন এবং মর্দ্দন ও বন্ধন করলে ধ্বজভঙ্গ রোগ ভালো হয়ে যাবে ।
৩। শান্ডা নামক জীবের তৈল লিঙ্গে মালিশ করলে অল্প দিনের মধ্যে ধ্বজভঙ্গ রোগ ভালো হয় । এই তৈল এক প্রকার বন্য ম্লেচছ জাতিরা সচরাচর কলিকাতা শহরে এবং নিকটবর্তী শহরতলীতে বিক্রয় করতে কখনো কখনো আসে ।
৪। পিযঙ্গু চার আনা ওজনের, ষষ্ঠিমধু চার আনা ওজনের এবং লোধ চার আনা ওজনের এই তিনটি দ্রব্যকে চূর্ণ করে একশের সরিষা তৈলের সঙ্গে মিশিয়ে দিবে এবং অল্প গরম করে উক্ত তৈলের দ্বারা মালিশ করলে ধ্বজভঙ্গ রোগ আরোগ্য হবে ।
৫। পদ্মের শিকড় ও গেঁড়ো পেষন করে কিঞ্চিৎ বেল পাতার রস মিশিয়ে ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে একটা পিতল পাত্রে রাখবে । আর উক্ত দ্রব্য সেবন করলে ইনশাআল্লাহ ধ্বজভঙ্গ রোগ বিনাশ হবে ।
৬। রুই মাছের পিত্ত চূর্ণ, গাওয়া ঘি, ও রৌপ ভস্ম সেবনে উক্ত রোগ ধ্বংস হয় ।
৭। পঞ্চপিত্ত সম পরিমাণ ভাল টাটকা ঘি দিয়ে রন্ধন করে লিঙ্গে মালিশ করলে ধ্বজভঙ্গ রোগ আরোগ্য হয় ।
বাজীকরণ বা রতিশক্তি বৃদ্ধিকারক ঔষধ
যে সমস্ত লোকের রতিশক্তি অর্থাৎ পুরুষত্ব শক্তি খুবই কম অর্থাৎ হয়ত রতিক্রিয়া শক্তি ছিল, কিন্তু কোন প্রকার অসুখ বশতঃ তা অল্প হয়ে গেছে অথবা একেবারে লোপ পেয়েছে । আবার অনেকের হয়ত অল্পমাত্র রতিশক্তি আছে । কিন্তু বীর্য ধারনের শক্তি নাই । সেই সমস্ত ব্যক্তির একান্ত উচিৎ যে নিম্ন লিখিত ঔষধগুলি প্রস্তত করে সেবন করা ।
১। শিমুল ফুলের রস আধ তোলার সঙ্গে কিঞ্চৎ চিনি মিশিয়ে কিছু দিন যাবৎ পান করলে বলবীর্য বৃদ্ধি পায় ।
২। ভুঁই কুমড়ার চূর্ণকে উক্ত ভুঁই কুমড়ার রসের দ্বারা সাতবার ভাবনা দিবে । তারপর উক্ত চূর্ণের এক তোলা আন্দাজের সঙ্গে কিঞ্চিৎ ঘৃত এবং মধু মিশ্রিত করে ২১ দিন পর্যন্ত সেবন করলে বলবীর্য বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ।
৩। আমলকী ফলের চূর্ণকে আমলকীর রসের দ্বারা সাতবার ভাবনা দিয়ে দুই রতি পরিমান বড়ি তৈয়ার করবে । আর উক্ত বড়ির একটিকে নিয়ে অল্প ঘৃত এবং চিনির সঙ্গে সেবন করবে । এইরূপে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত সেব্য । প্রতিদিন দুইটি করে বড়ি সেবন করবে । এই ঔষুধ সেবনে পুরুষ বৃদ্ধ হলেও যুবকের ন্যায় স্ত্রীসংসর্গে কাতর হবে না ।
৪। পুরাতন শিমুল শিকড়ের রস দুই তোলা নিয়ে, উহার সহিত অল্প চিনি মিশিয়ে প্রত্যহ সেব্য । এইরূপে দুই সপ্তাহ হতে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত সেবন করলে পুরুষ অতিশয় বলবান হয় ।
৫। ষষ্ঠিমধু চূর্ণ দুই তোলার সঙ্গে ঘৃত এবং মধু দিয়ে প্রত্যহ সেবন করবে । এইরূপে দুই সপ্তাহ সেবন করলে বলবীর্য বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ।
৬। ছোট চারা শিমুল মূল এবং তালমূলী বা তাল মাখনা গাছের শিকড় চূর্ণ করে প্রত্যহ এক তোলা করে চিনি দিয়ে সেব্য । এরূপে দু হতে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত সেবন করলে পুরুষের বীর্য বাড়ে এবং রতিশক্তি বৃদ্ধি হয় ।
৭। ভুঁই কুমড়ার ফল এবং শিকড় চুর্ণ আধ তোলা ঘৃত এবং দুগ্ধ মিশিয়ে কিছু দিন সেবন করলে বৃদ্ধ যুবশক্তি লাভ করে ।
৮। ছাগলের গোস্ত দুধ এবং ঘিয়ের সঙ্গে সিদ্ধ করে শিমুল মূল চূর্ণ এবং সৈন্ধব লবন চূর্ণ মিশ্রিত করে সেবন করলে পুরুষ অতিশয় রমণাক্ষম হয় ।
৯। তিল চূর্ণ ছাগী দুগ্ধের দ্বারা সাতবার ভাবনা দিয়ে সেবন করলে বিশেষ উপকার হয় ।
১০। পুই শাক গাছের শিকড়কে নিয়ে উত্তমরূপে পেষন করে এক পোয়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে ছেঁকে সমস্তটি পান পান করবে । পরে কাচা মুগের ডালকে ভিজিয়ে চিনি দিয়ে তিনদিন পর্যন্ত খেলে রতিশক্তি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ।
১১। লাল আপাঙ্গের গাছ সোমবারে জাগান দিয়ে মঙ্গলবার সকালে বাসি মুখে তুলে উক্ত শিকড়কে মাদুলীতে ভরে কোমরে বেঁধে রাখলে শুক্র স্তম্ভন হয় ।
১২। হরিতকী, শিলাজুত, বিড়ঙ্গ সম ওজনের নিয়ে চূর্ন করে উক্ত চূর্ণের আধ তোলা নিয়ে ঘৃত সহ সেবন করলে বৃদ্ধ ব্যক্তি যুবকের ন্যায় শক্তি লাভ করে ।
১৩। শ্মশানজাত নীল গাছের শিকড় শনিবারে তুলে মাদুলীতে ভরে কোমরে ধারন করলে শুক্র স্তম্ভন হয় ।
১৪। ক্রিকুট, ত্রিফলা, কুড়, ভীমরাজ, সৈন্ধব লবন, ধনে, কটফল, তালিশপত্র, নাগকেশর, জিরা জোয়ান, যষ্ঠিমধু, মেথী, কালজিরা এবং তেজপাতা প্রতিটি সমপরিমান নিয়ে শুষ্ক ও চুর্ণ করবে । তারপর ঐ চূর্ণগুলির সমান সিদ্ধি বিচা ঘৃতে ভেজে চূর্ণ করে নিয়ে উপরোক্ত চূর্ণগুলির সঙ্গে মিশিয়ে দিবে । তারপর ঐ সমস্ত চূর্ণগুলি একত্রে যত হবে সেই পরিমান চিনি মিশাবে । তারপর ঘৃত এবং মধু এরূপভাবে দিবে যেন বড়ি তৈরি হয় । পরে চার আনা ওজনের আন্দাজ বড়ি তৈরি করে উক্ত বড়িগুলির উপরে ঘিয়ে ভাজা তিল চূর্ণ, দারুচিনি চূর্ণ, ছোট এলাচ চূর্ণ, তেজপাতা চূর্ণ ও কার্পূর চূর্ণ ছড়িয়ে দিয়ে সুগন্ধ করে নিবে । পরে প্রত্যহ দুবেলা দুটি বড়ি এক বলকের দুগ্ধ দিয়ে সেবন করলে বৃদ্ধ ব্যক্তি যুবকের ন্যায় শক্তিমান হবে ।
১৫। শতমূলী রস আধ সের, দুগ্ধ চার সের, পানি ষোল সের একত্রে বড় মাটির পাত্রে দিয়ে মৃদু আঁচে সিদ্ধ করে চারসের থাকতে নামিয়ে নিয়ে উক্ত ক্কাথ পান করলে ইন্দ্রিয়শক্তি বৃদ্ধি হয় । আর কখনও ইন্দ্রিয় শৈথিল্য হয় না ।
ধ্বজভঙ্গ রোগের এলোপ্যাথি চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের স্থায়ী চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের ইসলামী চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের ব্যায়াম, ধ্বজভঙ্গ রোগের হামদর্দ চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের এলোপ্যাথি চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের স্থায়ী চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের হামদর্দ চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের ব্যায়াম, ধ্বজভঙ্গ রোগের ইসলামী চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের এলোপ্যাথি চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের স্থায়ী চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের কবিরাজি চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা, ইসলামে রোগের চিকিৎসা, সুন্নতি চিকিৎসা, ধ্বজভঙ্গ রোগ চিকিৎসা,